হাঁসের ডিম না মুরগি কোন ডিমে পুষ্টি বেশি

    হাঁসের ডিম না মুরগি কোন ডিমে পুষ্টি বেশি। শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণে ডিম অতুলনীয় ভূমিকা রাখে। মুরগির ডিম ও হাঁসের ডিম দুইটি জনপ্রিয়। ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমান প্রোটিন যার কারণে ডিমকে সুপার ফুড বলা হয়। ছোট থেকে বড় সব ধরনের মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ডিম ভীষণ উপকারি।

হাঁসের-ডিম-না-মুরগি-কোন-ডিমে-পুষ্টি-বেশি

তবে অনেকের মনে প্রশ্ন থেকে যায়, কোন ডিমে উপকার বেশি বা পুষ্টি বেশি । আজকে আমরা জানবো কোন ডিমে পুষ্টি বেশি হাঁসের ডিম না মুরগির ডিম। চলুন তাহলে জেনে আসি।

পেজ সূচিপত্র ঃ হাঁসের ডিম না মুরগি কোন ডিমে পুষ্টি বেশি

দেশি মুরগি ডিমের পুষ্টিগুন

দেশি মুরগির ডিম মানুষের কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।কেননা দেশি মুরগির ডিমে পুষ্টি বেশি। আমাদের দেশের সাধারণত দেশি মুরগি বাড়িতে পালিত হয়, বাড়ির খাবার দাবার খেয়ে বড় হয়। দেশি মুরগিকে বাইরের খাবার খাওয়ানো হয় না। যার কারণে দেশি মুরগির ডিমের পুষ্টিগুণ বেশি।

আরো পড়ুন ঃ খালি পেটে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

এছাড়াও রয়েছে ওমেগা ৩, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফোরিয়াম, ভিটামিন এ , ভিটামিন বি ১২, ভিটামিন বি ৫, ভিটামিন ডি,  জিংক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট । এইসব পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী । অসুস্থ রোগী থেকে শুরু করে ছোট বাচ্চা সবার জন্যই দেশি মুরগির ডিম ভীষণ উপকারী। তাই অকপটে বলা যায় সুস্থ থাকার জন্য অবশ্যই নিয়মিত একটি করে দেশি মুরগির ডিম খান।

দেশি মুরগি ডিমের উপকারিতা

দেশি মুরগির ডিমের প্রাকৃতিক ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা হৃদরোগে প্রতিরোধে সহায়ক। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখে এবং চুল ও ত্বকের সুরক্ষায় ভীষণ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এছাড়াও দেশি মুরগির ডিমের ঢাকা ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় ভীষণ গুরুত্ব পালন করে।

দেশি মুরগির ডিম স্বাস্থ্যকর যা শরীরের ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। অনেকেই মনে করে ,দেশি মুরগির ডিমে কোলেস্টেরেল বেশি থাকে।তবে এটা সঠিক নয় দেশি মুরগির ডিমে কোলেস্টেরলের পরিমান থাকে ১৮৬ মিলিগ্রাম।

 ক্যালরিঃ একটি সিদ্ধ দেশি মুরগির ডিমে রয়েছে ৭৮ ক্যালরি।

 প্রোটিন ঃ একটি সিদ্ধ দেশি মুরগির ডিমে রয়েছে ৬.৩ গ্রাম প্রোটিন।

ফ্যাট ঃ একটি সিদ্ধ দেশি মুরগির ডিমে রয়েছে ৫.৩৪ গ্রাম ফ্যাট।

ফার্মের মুরগি ডিমের পুষ্টিগুণ

ফার্মের মুরগিকে নির্দিষ্ট জায়গায়  পালন করা হয় এবং নির্দিষ্ট খাদ্য প্রদান করা হয় যার ফলে ফার্মের মুরগি বাজে খাবার খেতে পায় না এবং আপনার শরীরের পুষ্টি নিশ্চিত করে। আরো রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন , ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম এবং মিনারেল যা হাড়ের জন্য ভীষণ উপকারী । তাছাড়াও দেশি মুরগির ডিমের তুলনায় ফার্মের মুরগির ডিম আকারে বেশি বড় হয়।

ফার্মের মুরগির ডিমের আরেকটি গুন হলো সহজলভ্য এবং দামে কম হাওয়াই মানুষ চাহিদা অনুযায়ী খেতে পারে। ফার্মের ডিম শুধু সিদ্ধ করে খায় না, অনেকেই রান্না করেও খায় আবার অমলেট করে খায়। ফার্মের ডিম অনেক রকম করে খাওয়া যায়। প্রতিদিন মানুষের খাদ্য তালিকায় ফার্মের একটি করে ডিম থাকবেই।

ফার্মের মুরগি ডিমের উপকারিতা

ফার্মের ডিমে উচ্চ পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে, যা দৈনন্দিন প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। এছাড়াও ফার্মের মুরগির ডিমে ১১ ধরনের ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। দেশি মুরগির ডিমের তুলনায় ফার্মের মুরগির ডিম যেমন বড় হয়ে থাকে তেমন দামও কম। তাই সব ধরনের মানুষই দৈনন্দিন চাহিদা পূরণে ফার্মের মুরগির ডিম বেছে নেই।

আবার ফার্মের মুরগির ডিম স্বাস্থ্যের জন্য ভালো উপকারী। তাই আপনার চাহিদা অনুযায়ী ফার্মের মুরগির ডিম খেতে পারেন। দেশি মুরগির তুলনায় ফার্মের মুরগির ডিম কিছুটা পুষ্টিগুণ কম থাকলেও সহজলভ্য এবং সব সময় পাওয়া যায়। তাই চাহিদা অনুযায়ী ফার্মের মুরগির ডিম খান।

ক্যালরিঃ একটি সিদ্ধ ফার্মের মুরগির ডিমে ৭০ গ্রাম ক্যালরি রয়েছে।

প্রোটিন ঃ একটি সিদ্ধ ফার্মের মুরগির ডিমে ৬.৩ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে।

ফ্যাট ঃ একটি সিদ্ধ ফার্মের মুরগির ডিমে ১২.১০ গ্রাম ক্যালরি রয়েছে ।

হাঁসের-ডিম-না-মুরগি-কোন-ডিমে-পুষ্টি-বেশি

হাঁসের ডিমের পুষ্টিগুণ

হাঁসের ডিম মুরগির ডিমের তুলনায় আকারে বড় এবং এর পুষ্টি উপাদান বেশি। প্রতি 100 গ্রাম হাঁসের ডিমে রয়েছে ১৮১ গ্রাম ক্যালরি। হাঁসের ডিম ঠান্ডা লাগা রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। নিয়মিত হাঁসের ডিম খেলে ঠান্ডা লাগার রোগ থেকে আপনি রক্ষা পেতে পারেন। তাই শীতকাল পড়লে অনেকে এমন আছে হাঁসের ডিম নিয়মিত খাওয়া শুরু করে।

হাঁসের ডিম রয়েছে ওমেগা ৩, ফ্যাটি এসিড, আয়রন, ভিটামিন  এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি ১২, জিঙ্ক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও হাতের ডিমে প্রোটিনের মাত্রা মুরগির ডিমের মাত্রা থেকে অনেক বেশি । আবার হাঁসের ডিমের কোলেস্টেরল পরিমান রয়েছে ৬০০ মিলিগ্রাম।

হাঁসের ডিমের উপকারিতা 

হাঁসের ডিমে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম  রয়েছে যা শরীরের জন্য ভীষণ উপকারি। হাঁসের ডিমে আরও রয়েছে ভিটামিন এ যা আপনার দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী। হাঁসের ডিম ওজন কমাতেও ভীষণ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কেননা এই ডিম অনেকক্ষণ পেটকে ভরিয়ে রাখে যার ফলে ঘনঘন ক্ষুধা লাগে না। যেহেতু ক্ষুধা কম লাগে তাই বলা যায় স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হাঁসের ডিম ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ।

এছাড়াও হাঁসের ডিম তাদের বেশি প্রয়োজন যাদের বেশি পরিমাণ প্রোটিন ও শক্তির প্রয়োজন। এটি প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি ও প্রোটিন যুক্ত তাই যাদের ক্যালরি ও প্রোটিনের ঘাটতি রয়েছে তারা নিয়মিত একটি করে হাঁসের ডিম খান। অপরপক্ষে যাদের কোলেস্টেরল বা পেশারের সমস্যা রয়েছে তারা একটু সচেতন থাকবেন।

ক্যালরি ঃ হাঁসের ডিমে ক্যালোরি রয়েছে ১৮১ গ্রাম।

প্রোটিন ঃ হাঁসের ডিমে প্রোটিন রয়েছে ১৩.৫ গ্রাম।

ফ্যাট ঃ হাঁসের ডিমে ফ্যাট রয়েছে ১৩.৭ গ্রাম।

আরো পড়ুন ঃ ঝাপসা ছবি স্পষ্ট করার ৮ টি উপায়

হাঁসের-ডিম-না-মুরগি-কোন-ডিমে-পুষ্টি-বেশি

উপসংহার ঃ হাঁসের ডিম না মুরগি কোন ডিমে পুষ্টি বেশি

হাঁসের ডিম এবং মুরগির ডিম তুলনামূলকভাবে দুটোই পুষ্টিগুণে ভরপুর। স্বাদের দিক থেকে হাঁসের ডিম মুরগির ডিম থেকে কিছুটা  আঁশটে ভাব রয়েছে। অপরদিকে মুরগির ডিমের তুলনায় হাঁসের ডিম আকারে বড় হয়। হাঁস অথবা মুরগি দুটো রিমি আমাদের কাছে ভীষণ উপকারী একটি খাদ্য। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কম বেশি আমাদের ডিম থাকে। হয়তোবা না তাই না হয় দুপুরের খাবারের তালিকায়।

প্রিয় পাঠক , আপনি যদি আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই জেনে গেছেন হাঁসের ডিমরা মুরগির ডিম কোন ডিমে পুষ্টি বেশি। আপনার চাহিদা অনুযায়ী যে কোন ডিম খেতে পারেন। তবে সর্বোপরি বলতে পারি দেশি মুরগির ডিম সর্বোত্তম। তবে আজকাল দেশি মুরগির ডিম খুব একটা পাওয়া যায় না , পাওয়া গেল দাম অনেক বেশি। হাঁসের ডিম ও মুরগির ডিম দুই ডিম এই পুষ্টিগুণে ভরপুর। শরীর সুস্থ রাখতে তাই প্রতিদিন একটি করে ডিম খান।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url