বাচ্চাদের ওজন বাড়ানোর সহজ উপায়

  বাচ্চাদের ওজন বাড়ানোর সহজ উপায়। আপনার বাচ্চার ওজন নিয়ে কি আপনি চিন্তিত? বাচ্চার বয়স অনুযায়ী কি বাচ্চার ওজন বাড়ছে না। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। আজকে আমরা জানবো বাচ্চাদের ওজন বাড়ানোর সহজ উপায় সম্পর্কে।

বাচ্চাদের-ওজন-বাড়ানোর-সহজ-উপায়

বাচ্চাদের ওজন বাড়ানোর জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে  খাবার । বাচ্চা কি ধরনের খাবার খাচ্ছে, সেই খাবারের সে সঠিক পুষ্টি পাচ্ছে কিনা , পুষ্টির অভাবে অনেক সময় বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি পায় না। তাই আজকে আমরা আলোচনা করব বাচ্চাদের ওজন বাড়ানোর জন্য কি কি পুষ্টিকর খাবার খাওয়া যায়।

পেজ সূচিপত্র ঃ বাচ্চাদের ওজন বাড়ানোর সহজ উপায়

বাচ্চাদের ওজন বাড়ানোর সহজ উপায়

বাচ্চার বয়স বাড়ার সাথে সাথে যদি ওজন না বাড়ে তাহলে আমরা সকলেই খুব টেনশনে পড়ে যাই। আর টেনশন হবে এটা খুব স্বাভাবিক, তাই আমাদের আগে জানতে হবে বাচ্চাদের কোন কোন পুষ্টিকর খাবার দেওয়া উচিত , যে খাবারে বাচ্চাদের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করবে এবং ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। একটি বাচ্চার ওজন বৃদ্ধিতে পুষ্টিকর খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।

আরো পড়ুন ঃ নিয়মিত পাকা কলা খাওয়ার  ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা

বড় হওয়ার সাথে সাথে বাচ্চাকে আমরা কি ধরনের পুষ্টিকর খাবার দিচ্ছি সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অনেক বাচ্চা এমন আছে খেতে চাই না, খাওয়া নিয়ে অনেক ঝামেলা করে। এই সকল বাচ্চাদের ওজন নিয়ে সমস্যাটা বেশি থাকে। বয়সে তুলনায় তাদের ওজন বৃদ্ধি পায় না। খাবারে অনীহা দেখা দিলে আপনি অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। সঠিক সময়ে বাচ্চাদের ওজন বৃদ্ধি না পেলে শারীরিকভাবে ও সে দুর্বল থাকবে। তাই অবশ্যই আপনাদের সচেতন হতে হবে।তাই আজকের আর্টিকেল টিতে আলোচনা করবো ওজন বাড়ানোর জন্য কি খাবার দেওয়া উচিৎ বাচ্চাদের ,তাহলে চলুন জেনে আসি।

বাচ্চাদের ওজন বৃদ্ধিতে দুধের উপকারিতা

বাচ্চাদের শরীরে যত ধরনের পুষ্টি দরকার তার মধ্যে প্রায় সবগুলো দুধে পাওয়া যায়। দুধে প্রচুর  ক্যালসিয়াম আছে যা হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে, ভিটামিন বি ১২ আছে যা বাচ্চাদের রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে।দুধ প্রোটিনেরও খুব ভালো উৎস।দুধের পাশাপাশি টক দই,চিজ ও খাওয়াতে পারেন।

এছাড়াও দুধের আরেকটি বড় সুবিধা হলো অন্যান্য খাবারের সাথে এক গ্লাস দুধ খেয়ে নেয়া যায়। আমরা সকলেই জানি বাচ্চাদের জন্য দুধের বিকল্প অন্য কিছু নেই। তাই আপনার বাচ্চার ওজন বাড়াতে নিয়মিত এক গ্লাস দুধ খাওয়ান।

আরো পড়ুন ঃ চুলের যত্নে কালোকেশী ব্যবহার

বাচ্চাদের ওজন বৃদ্ধিতে কলা 

বাচ্চাদের ওজন বাড়ানোর আরেকটি সহজ উপায় হলো কলা। বাচ্চা থেকে শুরু করে বড়দের পর্যন্ত শরীরের জন্য কলা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কলাতে ভিটামিন বি ৬ আছে যা রোগ  প্রতিরোধ ক্ষমতায় সাহায্য করে। কলাতে ভালো পরিমাণ ফাইবার আছে যা বাচ্চার হজম শক্তিতে সাহায্য করে।

আবার কলা খুব সহজলভ্য  এক্যটি ফল যা সারা বছর বাজারে পাওয়া যায়। আর দামও খুব কম। সবথেকে মজার ব্যাপার হলো ছোট বাচ্চাদের মধ্যে কম বেশি সব বাচ্চাই কিন্তু  ফলের মধ্যে কলা খুব পছন্দ করে।তাই খুব সহজেই একটি বাচ্চাকে দিনে ২ থেকে ৩ টি কলা খাওয়াতে পারেন।

বাচ্চাদের ওজন বৃদ্ধিতে ডিম

দিনকে অনেকেই বলেন প্রকৃতির মাল্টিভিটামিন। এতে ভিটামিন এ আছে যা বাচ্চাদের চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ভিটামিন বি ২ যা ত্বক ভালো রাখে, পরিমাণ মতো ড্রিঙ্ক আছে যা বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমনই আরো অনেক ভিটামিন মিনারেল সমৃদ্ধ হলো ডিম। আর ডিম পাওয়া যায় অল্প দামে, এবং প্রায় সব খাবারের সাথে ডিম খাওয়া যায়।

বাচ্চাদের সকালের নাস্তার সাথে ১টি বা ২টি সিদ্ধ ডিম খাওয়ান। এটা বাচ্চাদের ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। তবে ডিম ভাজির কথা বলছি না, কারণ অস্বাস্থ্যকর তেল দিয়ে ভাজলে সেটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই বাচ্চাদের অবশ্যই সিদ্ধ ডিমটা খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন।

বাচ্চাদের-ওজন-বাড়ানোর-সহজ-উপায়

বাচ্চাদের ওজন বাড়াতে খেজুর

খেজুর এমন একটা অসাধারণ ফল, যার মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম । আর এসব উপাদান হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া আরও রয়েছে আইরন ফলিক এসিড যার রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। খেজুরের প্রচুর পরিমাণ ফাইবার আছে যা হজমেও সাহায্য করে।

আপনি চাইলে আপনার বাচ্চার নাস্তার সাথে দুই থেকে তিনটা খেজুর এড করতে পারেন। নিয়মিত খেজুর খেলে বাচ্চার স্বাস্থ্য বৃদ্ধি পাবেই। খেজুর খুব উপকারী একটি ফল শরীরের জন্য। শুধু বাচ্চা না খেজুর বড়দের কজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

ওজন বৃদ্ধিতে মসুর ডাল

ডালে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন আছে। গরুর মাংস , খাসির মাংস থেকে আমরা যেমন প্রোটিন পায় তেমন ডাল থেকেও আমরা প্রোটিন পায়। বাচ্চাদের পাতলা ডাল না খাইয়ে একটু গারো ডাল খাওয়াবেন। কিন্তু গরুর মাংস খেলে যেমন কিছু ক্ষতিকারক চর্বি থাকে কিন্তু ডালে সেই ঝুঁকি নেই। নিশ্চিন্তে আপনার বাচ্চাকে ডাল খাওয়াতে পা্রেন। এ ছাড়াও ডালে রয়েছে আয়রন , পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম সহ আরো অনেক ধরনের পুষ্টি। এর সবগুলোই বাচ্চাদের সুস্থ শরীরের জন্য প্রয়োজন।

ডাল আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে, বুঝিয়ে বল্‌, আমাদের পেটের নাড়িভুড়িতে কোটি কোটি জীবাণু আছে এই জীবাণু আমাদের অসুস্থ করে না বরং সুস্থ রাখে। এরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, ভিটামিন তৈরি থেকে শুরু করে শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশ নেয় । এই জীবাণুগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বিশেষ কিছু খাবার আছে এগুলোকে বলা হয় প্রিবায়োটিক খাবার। ডাল হলো একপ্রকারের প্রি বায়োটিক খাবার । ডালের নির্দিষ্ট কিছু উপাদান আমাদের পেটের নারী ভুড়ির এই উপকারী জীবাণুর খাদ্য তাদেরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে । তাই বাচ্চাদের খাবারের তালিকায় প্রতিদিন মসুর ডাল রাখুন।

শাক সবজি ওজন বৃদ্ধির সহায়ক

বাচ্চাদের ওজন ঠিক রাখতে সব থেকে কার্যকরী ও গুরুত্বপূর্ণ খাবার হলো বিভিন্ন শাক সবজি। প্রত্যেক সিজনেই কিছু কিছু নতুন নতুন সবজি পাওয়া যায়, যে সবজিগুলো অনেক পুষ্টিকর ও ভিটামিন সমৃদ্ধ। বাচ্চাদের প্রতিদিন খাবারে তালিকায় মাছ-মাংসের সাথে অবশ্যই শাক সবজি রাখুন।

সব সবজিতেই পুষ্টি ভিটামিন, মিনারেল, ক্যালসিয়াম , জিংক রয়েছে। ছোট বাচ্চারা সাধারণত সবজি খেতে পছন্দ করে না, এরপরও আপনি চেষ্টা করবেন প্রতিদিন খাবারের সাথে কিছু না কিছু সবজি খাওয়ানো। ছোট বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এই সবজি।

  ওজন বাড়াতে মাছ ও মাংস

আমিশ ও প্রোটিনের অন্যতম উচ্চ হলো মাছ ও মাংস। এটা বাচ্চাদের শরীরের কতটা পুষ্টি যোগায় তা  আমরা সকলেই জানি। অনেক বাচ্চা এমন আছে যারা মাছ-মাংস খেতে চায় না।এ ক্ষেত্রে আপনার উচিৎ যেভাবে  আপনার  বাচ্চা খেতে পচ্ছন্দ করে সেভাবে রান্না করে দেয়া। বর্তমানে সব বাচ্চারাই  রান্না করা মাছ-মাংসর চাইতে ফ্রাই করে খেতে বেশি পছন্দ করে। আপনার বাচ্চা যদি একদম খেতে না চায় তাহলে আপনি তাকে সেভাবেই খাওয়ান।

মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে যা পেশী মজবুত করে এবং ্বাচ্চা ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই সপ্তাহে পাঁচ দিন আপনার বাচ্চাকে মাছ খাওয়ান ও দুইদিন মুরগির মাংস। এই খাবারগুলো নিয়মিত খাওয়ালে অবশ্যই আপনার বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি পাবে।

ওজন বৃদ্ধিতে মিষ্টি আলু

খাবার খাওয়া শিখার পর থেকে আপনার শিশুকে নিয়মিত মিষ্টি আলু খাওয়ানোর অভ্যাস করুন।বাচ্চাদের ওজন বৃদ্ধির জন্য মিষ্টি আলু খুবই কার্যকরী। মিষ্টি আলুতে রয়েছে পটাশিয়াম , ম্যাগনেসিয়াম ,ফসফরাস, ভিটামিন এ , ভিটামিন সি , ভিটামিন বি ৬ এবং কপার এসবগুলো উপাদান মিষ্টি আলোর মধ্যে বিদ্যমান। আপনার বাচ্চার ওজন বাড়াতে ভীষণ সাহায্য করে।

আরো পড়ুন ঃ আরবি মাসের কত তারিখ আজ ২০২৫

শুধু ওজন নয়, বাচ্চার মেধাবিকাশেও মিষ্টি আলু গুরুত্বপূর্ণ । মিষ্টি আলু অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ তাই বাচ্চার ওজন বাড়াতে অপরিহার্য গুরুত্ব পালন করে। মিষ্টি আলো আপনি সিদ্ধ করে খাওয়াতে পারেন।

বাচ্চাদের-ওজন-বাড়ানোর-সহজ-উপায়

ওজন বৃদ্ধিতে সয়াবিন

ওজন বৃদ্ধিতে সয়াবিন  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমস্ত নিরামিষ খাবারের মধ্যে সয়াবিনের সবচেয়ে বেশি প্রোটিন পাওয়া যায়। সয়াবিনে থাকা বিশুদ্ধ প্রোটিন যা বাচ্চার হাড় এবং টিস্যুর ভর উন্নত  করতে সাহায্য করে। যার ফলে বাচ্চার ওজন ও বৃদ্ধি পায় এমনকি বাচ্চার উচ্চতা ও বৃদ্ধি পায়।

ওজন বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন ৫০ গ্রাম সয়াবিন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। তাই সর্বোপরি বলতে পারি বাচ্চাদের যথেষ্ট স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে খাবারের গুরুত্ব অধিক। পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে সয়াবিন বিদ্যমান।

 উপসংহার ঃ বাচ্চাদের ওজন বাড়ানোর সহজ উপায়

একটি বাচ্চার সর্বোত্তম বৃদ্ধি ও বিকাশের ক্ষেত্রে ওজন হচ্ছে অন্যতম । বাচ্চা যদি কম ওজন বিশিষ্ট হয়, তাহলে অভিভাবক হিসাবে উদ্বিগ্ন হওয়াটা স্বাভাবিক। তাই আপনাকে আগে দেখতে হবে কি কারনে আপনার বাচ্চার ওজন বাড়ছে না। তার পাশাপাশি কি ধরনের খাবার বাচ্চাকে দিচ্ছেন সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

একটি বাচ্চা সুস্থ ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য পুষ্টিকর খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ । তাই অবশ্যই অভিভাবক হিসেবে আপনাকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। যাতে আপনার বাচ্চার বয়স অনুযায়ী স্বাস্থ্য ঠিক রাখে ওজন বৃদ্ধি পায়।

প্রিয় পাঠক, আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হবেন। আপনার যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে এসে কমেন্ট করবেন। এতক্ষণ সময় নিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url